সেই সাথে ফসলি জমি ও মসজিদসহ নানা স্থাপনা বিলীন হয়ে গেছে। চরম হুমকির মুখে রয়েছে মাদ্রাসা, কবরস্থানসহ উপজেলা শহর রক্ষায় নির্মিত বেড়িবাঁধ। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে কয়েক শ পরিবার।
নতুন করে ভাঙনের জন্য স্রোত আর ড্রেজার দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলনকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা। তারা অবিলম্বে বালু উত্তলন বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। পাশাপাশি স্থায়ী বাধঁ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন ভাঙনকবলিত এলাকার অসহায় মানুষজন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দ্বিতীয় দফায় মধুমতির ভাঙনে মহম্মদপুরের দুই ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামের মানুষ এখন দিশেহারা। গত ১০ বছরে একাধিকবার বসতভিটা হারিয়ে সর্বশান্ত মানুষগুলো মাথা গোজার ঠাঁই নিয়ে চরম শঙ্কিত।
গত দুই সপ্তাহ ধরে ভাঙনের মুখে সব হারিয়েছে শীরগ্রাম, কাশিপুর, ভোলানাথপুর, ধুলঝুড়ি ও গোপালনগরের কয়েক শ পরিবার।
সরেজমিনে দেখা যায়, কাশিপুর হতে এলেংখালি শেখ হাসিনা সেতু পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে তীব্র নদী ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। মাঝে উপজেলা শহর রক্ষা বাঁধও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ব্লক খসে পড়তে শুরু করেছে। নদীর পানি কমতে থাকায় এ ভাঙন। বালু উত্তোলনের ফলে তলদেশে খাদ সৃষ্টি হয়ে পাড় ভেঙে পড়ছে বলে জানালেন স্থানীয়রা।
শিরগ্রাম খেয়া ঘাট ও কাশিপুর কবরস্থান সংলগ্ন নদীর চরসহ এলেংখালি সেতু পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালী মহল দীর্ঘদিন যাবৎ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে আসছে।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, প্রশাসনকে বারবার অবহিত করা হলেও তেমন তৎপরতা না থাকায় অবৈধ বালু উত্তোলন থেমে নেই।
কাশিপুরের বাসিন্দা বৃদ্ধা সায়রা বানু জানান, নিজের বাপ-ভাইদের ভিটাসহ স্বামীর জায়গা-জমি সবই নদী ভাঙনে তলিয়ে গেছে তার। গত কয়েক বছরে ভাঙনের পর চারবার বসতঘর বদলেছেন তিনি। এখন তার মনে হচ্ছে কবরস্থানেও ঠাঁই হবে না। সেটিও বিলীন হয়ে যেতে বসেছে। তার স্বজনদের প্রায় সকলেই অনত্র চলে গেছেন।
মাগুরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সরোয়ার জাহান সুজন বলেন, ‘নদীর কূল ঘেঁষে বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এ বছর মধুমতির ভাঙনকবলিত ঝামা এলাকায় কিছু জিও ব্যাগ ফেলার কাজ শেষ হয়েছে। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।’
মহাম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রমানন্দ পাল জানান, অচিরেই এ বিষয়ে বিস্তারিত অবস্থার খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন তিনি। আর এ উপজেলায় সরকারি খতিয়ানে তিনটি বালুমহল রয়েছে। যার মধ্যে বর্তমানে শুধুমাত্র ঝামা এলাকার একটি বালুমহল ছাড়া আর কোনোটির ইজারা দেয়া হয়নি। এ অবস্থায় যদি কেউ অবৈধভাবে বালু উত্তলন করে থাকেন তবে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবে বলে জানান তিনি।